ড্রপ খাওয়ার আগ পর্যন্ত বুঝতে পারি নাই এইটার যন্ত্রনা আসলে কি ।
আমি সাবেক চবিয়ান ।
খুব বেশিদন হয়নি চবি ছেড়েছি । যখন ড্রপ খেয়েছিলাম তখন আস্তে আস্তে চেনা জগতটা অচেনা হয়ে গেলো । আমার কোন বন্ধুকে পাই নি ওই সময়টায় আমার পাশে ছিল । ক্লাসে নিত্যদিন অপমান ছিল স্বাভাবিক ব্যাপার । আস্তে আস্তে ক্লাসে যাওয়া বাদ দিলাম ।
ছেলেরা নাকি কোন কিছুতেই কাঁদে না । কিন্তু আমি কেঁদেছিলাম । অনেক চেষ্টা করেও ওই সময়টা নিজেকে আর ট্র্যাকে আনতে পারি নি । আমি চেষ্টা করেছি । লাভ হয়নি । নিজেকে আস্তে আস্তে গুটিয়ে নিলাম ।
সব থেকে খারাপ লাগলো ওইদিন যেদিন আমার এক ম্যাডাম বললেন , কতোদিন ক্যাম্পাসে থাকবা ? লজ্জা করে না ? তোমার জায়গায় আমি হলে আত্মহত্যা করতাম !!
ওইদিন হলে ফিরে এসে ভাবলাম , আমার কি সুইসাইড করা উচিত ?
সুইসাইড করা উচিত কিনা সেটার উত্তর পেলাম পরের দিন । আমার এক স্যার কথায় কথায় বলে বসলেন , টাকা কামাই করবে কবে ? আদৌ চাকুরী করতে পারবা ?
বুঝলাম আমার মতো ছেলেদের সুইসাইড করাই উত্তম ।
অনেক সাহস নিয়া সেদিন হলের ছাদে উঠলাম । রাত বাজে ২ টা । আমি মরে গেলে কেউ দেখবেও না । হয়তো দয়া করে কেউ ""মেধাবী "" শব্দটা ইউজ করতে পারে । মনে অনেক চাপ । পরশুদিন আবার ৩ ক্রেডিটের এক্সাম । এক্সাম দেয়ার মতো অবস্থা নাই ।
সুইসাইড করতে পারলাম না । সেদিন রাত ৩ টায় রুমে ফিরলাম । ঘুমাতে পারলাম না সারারাত ।
কোন রকমে এক্সাম দিলাম । এক্সাম হলেও স্যারদের কটাক্ষ ছিল আমার নিত্য সঙ্গী । ততোদিনে আমি নষ্ট হয়ে গেছি ।
এরপরেও বিপর্যয়ের মুখে এক্সাম গুলো দিয়ে গেলাম । সব মনোবল এক করে পড়াশুনা করতে লাগলাম । জানি আমার পেছনে কেউ নাই । একা শুধুই একা নিজের রাস্তা চলেছি আমি । রাত জেগে সিভি বানাইতাম । আমি জানি কোন স্যার আমাকে রিকমেন্ড করবে না । আমি জানি সুইসাইড করলে কেউ আমার দিকে ফিরেও তাকাবে না । পুরো মাস্টার্সে আমি শুধু নিজের পড়াশুনা আর সিভির পেছনেই টাইম দিলাম । প্রতিদিন মনে হতো মরে যাবো । তারপরেও যেন কিভাবে বেঁচে রইলাম ।
যাই হোক এতো ইমো খাওয়ার দরকার নাই ।
আগে ইমো খাইতাম । এখন আর খাই না । এখন আমি জব করছি । স্পিডের নাম শুনেছেন ? কিংবা মজো অথবা ক্লেমনের নাম ? ফ্রুটিকার নাম শুনেছেন ? আমি সেই ফ্যাক্টরিতে এক্সিকিউটিভ হিসাবে চাকুরী করি । এইটা ছিল আমার থার্ড ইন্টারভিউ । এখানে মেধা তালিকায় প্রথম হয়ে আমি জব নিয়েছি । ভালো বেতন দেয় । আপনার হাতের যে স্পীডের ক্যানটা ঘুরছে অথবা ফ্রুটিকা খাচ্ছেন সেটা আমার সাইন ছাড়া বাজারে যায় না । প্রথম সাইনটা আমি করি । প্রোডাক্ট ঠিকাছে কিনা সেটা আমি জাজ করি ।
আমার যে ম্যাডাম আমাকে সুইসাইড করার খোচা দিয়েছিলেন তাকে আমি উপহার স্বরূপ এক কাটন জুস পাঠিয়ে দিয়েছি । আর আমার যে স্যার আমাকে ইনকাম করার খোঁচা মেরেছিলেন তাকে আমি ইনটেক ৪৮ টা স্পীডের ক্যান পাঠিয়ে দিয়েছি ।
জীবনটা সুইসাডের জন্য নয় ।
দোয়া রাখবেন যেন আরো ভালো জায়গায় যেতে পারি । ড্রপ খাওয়া মানেই সব শেষ নয় ।
কালেক্টেড
হ্যাঁ আমি !সেদিন হলের ছাদে উঠলাম
November 04, 2019
1 Comment
drop life student
dropper
last banchers
life
my life
student life bangladesh
ড্রপ খাওয়া মানেই সব শেষ নয়
Reply